পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের বরাতে বলা হয় যে, শনিবার বিকেলে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে এই আহ্বান জানিয়েছেন ইমরান খান। পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল, রেডিও ও ডিজিটাল মাধ্যমগুলোতে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে এই কথা বলেন ইমরান খান। তিনি আরও বলেন যে, ‘পাকিস্তানের রাজনীতি আজ এমন জায়গায় পৌঁছেছে গেছে যে, জাতিকে আজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে, দেশকে আপনারা এখন কোথায় নিতে চান।যে সমাজ সততা ও ন্যায়ের পক্ষে থাকে, সেই সমাজ সবসময় নতুন জীবন পায়। কিন্তু কোনো সমাজ যখন নিরপেক্ষ হয়, তারা তখন খারাপকে সমর্থন করা শুরু করে।’
পাকিস্তানে এখন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করেছেন ইমরান খান।ইমরান খান বলেন যে, ‘এটা প্রমাণিত যে, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে রাজনীতিবিদেরা ছাগলের মতো এখন বিক্রি হচ্ছেন।সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র বিদেশ থেকে শুরু হয়েছে।আর দেশের ভিতরে বিশ্বাসঘাতকেরা বিদেশিদের সাহায্য করে যাচ্ছে।’
এই সময় পাকিস্তানের তরুণদের উদ্দেশে ইমরান খান বলেন যে, ‘আপনারা এখন চুপচাপ বসে থাকবেন না। যদি এখন চুপ থাকেন, তাহলে আপনারা খারাপের দলে চলে যাবেন।আমার জন্য না; বরং আপনাদের নিজের ভবিষ্যতের জন্য আমি চাই, আপনারা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাই প্রতিবাদ করবেন ও আওয়াজ তুলুন।’
তরুণদের প্রতি শনিবার ও রোববার ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ’ দেখানোর আহ্বান জানিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, ‘যুক্তরাজ্য যখন অবৈধভাবে ধ্বংসাত্মক অস্ত্র ব্যবহার করল ও ইরাকে হামলা চালাল, তখন দেশটিতে ২০ লাখ মানুষ প্রতিবাদে নেমেছিলেন। সেটা তখন সহিংস ছিল না। একটি হাঁড়িও তারা ভাঙেনি।’ তিনি আরও বলেন যে, ‘আমি তাঁদের (প্রতিবাদকারীদের) সঙ্গে ছিলাম। প্রতিবাদ করতে কোনো রাজনৈতিক দল তাঁদের উপর জোর খাটায়নি। তাঁরা নিজেরাই তখন রাস্তায় নেমেছিলেন। একটি জাতি যে বেঁচে আছে এটি হল তারই লক্ষণ।’
পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটির সেনাবাহিনীকে নিয়ে সমালোচনাকে কীভাবে দেখছেন ,এমনই প্রশ্নের জবাবে ইমরান বলেন যে, ‘দয়া করে মনে রাখবেন যে, আজ দুটি জিনিস দেশকে ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছে। প্রথমটি হলো পাকিস্তানের সেনাবাহিনী।এটি একটি শক্তিশালী ও পেশাদার সেনাবাহিনী।দেশের জন্য এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনেক দেশই পাকিস্তানের ক্ষতি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগ তুলে গত সোমবার জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এরপর গত বৃহস্পতিবার পরিষদের অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণ পরই তা মুলতবি করে ঘোষণা করা হয়। রোববার আবার অধিবেশন বসার কথা বলা হয়েছে।ঐদিনই প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি হতে পারে বলে জানা গেছ।